Saturday, December 14, 2024

বঙ্গোপসাগরের অর্থনৈতিক গুরুত্ব

বঙ্গোপসাগরের ৩০ থেকে ৮০ মিটার গভীরতায় এক ধরণের ক্লের সন্ধান পাওয়া গেছে । অগভীর সমুদ্রের এ ক্লে উত্তোলন করা গেলে বাংলাদেশেরৈ সিমেন্ট শিল্পে বিল্পব ঘটে যাবে । কারণ ক্লে সিমেন্ট উৎপাদনের অন্যতম কাঁচামাল।

অতি সম্প্রতি মূল্যবান খনিজসম্পদ ইউরেনিয়াম ও থোরিয়ামের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে বাংলাদেশের অগভীর ও গভীর সমুদ্রের তলদেশে।

জানা যায়, ১৩ টি জায়গায় আছে সোনার চেয়ে দামি বালি । যাতে মিশে আছে ইলমেনাইঠ, জিরকন, গার্মেট, সিলিমানাইট, রুটাইল, ম্যাগনেটাইট।

ধারণা করা হচ্ছে, বাংলাদেশের সমুদ্র ভাগেও বড় ধরণের গ্যাসের মজুদ আছে।

প্রাণীজ সম্পদের মধ্যে মৎস্য ও সামুদ্রিক নানা প্রাণী, লতা-গুল্ম প্রভৃতির কথা বলা যায়। যদি পরিপূর্ণভা্বে বঙ্গোপসাগরে মৎস্য সম্পদসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণী, মূল্যবান লতা-গুল্ম আহরণের মাধ্যমে এগুলো যথাযথ প্রক্রিয়াকরণের ব্যবস্থা করা যায়, তাহলে রপ্তানী পণ্য তালিকায় এগুলো গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করতে পারে।

বঙ্গোপসাগরে অর্জিত সমুদ্রসীমা থেকে প্রায় ১০ লাখ টন খনিজ বালু আহরণ করা  সম্ভব।

সাগরের তলদেশে ক্লেসার ডেপোজিট, ফসফরাস ডেপোজিট, এডাপোরাইট, পলিমেটালিক সালফাইড, ম্যাঙ্গানিজ নডিউল নামক খনিজ পদার্থ আকরিক অবস্থায় পাওয়া যাবে আশা করা যায়। এর পরিশোধনের মাধ্যমে লেড, জিঙ্ক, কপার, কোবাল্ট, মলিবডেনামের মতো দুর্লভ ধাতু আহরণ করা সম্ভব। এসব দুর্লভ ধাতু উড়োজাহাজ নির্মাণে, রাসায়নিক কারখানায় এবং বিভিন্ন কলকারখানায় উৎপাদন কাজে ব্যবহার করা যাবে।

২০১২ সালে মিয়ানমান ও ২০১৪ সালে ভারতের সঙ্গে ভাগাভাগি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিদ্যমান বিরোধ নিষ্পত্তি হয়েছে। মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রে বিরোধপূর্ণ ১৭ টি ব্লকের ১২ টিই পেয়েছিলো বাংলাদেশ। ভারতের দাবীকৃত ১০ টি ব্লেকের সবই পাওয়া গেছে। ভারত ও মায়ানমারের সঙ্গে বিরোধ নিষ্পত্তির পের বাংলাদেশ ১১৮৮১৩ কিলোমিটার বেশি সমুদ্র এলাকা, ২০০ নটিক্যাল  মাইলের একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং চট্রগ্রাম উপকূল থেকে ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত সব ধরণের প্রাণিজ ও অপ্রাণিজ সম্পদের উপর সার্বভৌম অধিকার পেয়েছে।

বাংলাদেশের মূল ভূ-খন্ডে প্রাকৃতিক গ্যাস মজুদ দিন দিন কমে আসছে অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদের আধিক্য কখনোই ছিল না । সীমাবদ্ধ প্রাকৃতিক সম্পদ নিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি জোরালো হতে পারেনি। বারবার হোঁচট খেয়েছে। কৃষি জমির পুনর্ব্যবগারের ফলে উৎপাদনশীলতা দিন দিন কমে আসছে। জনসংখ্যার চাপ এবং শিল্পায়ন নগরায়নের কারণে দিন দিন কমছে। এমনই প্রেক্ষাপটে বঙ্গোপসাগর আমাদরে অর্থনীতির সমৃদ্ধির জন্য বিরাট ভরসার কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠতে পারে। বঙ্গোপসাগরকে অবহেলা না করে এর গুরুত্ব অনুধাবণ করতে হবে।

No comments:

Post a Comment