বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতি এদেশের অর্থনৈতিক অবস্থাকে নানাভাবে প্রভাবিত ও নিয়ন্ত্রিত করে থাকে। গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে বঙ্গোপসাগর থেকে আগত দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু পাহাড়ে বাধা পেয়ে ব্যাপক বৃষ্টিপাত ঘটায়। এ বৃষ্টির ফলে বাংলাদেশ কৃষিকার্যে যথেষ্ট উন্নতি লাভ করেছে। শীতকালে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ু পাহাড়ে বাধা পেয়ে সামান্য বৃষ্টিপাত ঘটায়, যার ফলে বাংলাদেশে প্রচুর রবিশস্য জন্মে। এছাড়া অধিক বৃষ্টিবহুল পাহাড়ি অঞ্চলে বনভূমির সৃষ্টি হয়েছে। এসব বনভূমি থেকে প্রচুর মূল্যবান কাঠ ও অন্যান্য বনজসম্পদ সংগ্রহ করা হয়। এছাড়া পাহাড়ের ঢালে চা, রাবার, আনারস ইত্যাদির চাষ হয়।
মধুপুর অঞ্চলে গজারি বৃক্ষ বিখ্যাত, অন্যদিকে, নদীবাহিত উর্বর পলল মৃত্তিকা ও অনূকূল প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য এ অঞ্চলের অধিকাংশ স্থানেই কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য, পরিবহন, জনবসতি ইত্যাদির বিশেষ উন্নতি হয়েছে। এখানে সমতল ভূমি ও বহু নদ-নদী থাকায় সড়ক, রেল ও জলপথে পরিবহনের বিশেষ উন্নতি হয়েছে।
দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমির লবণাক্ত ভূমির প্রভাব বিশাল স্রোতজ বনভূমির সৃষ্টি হয়েছে। এ বনভূমির অর্থনৈতিক গুরুত্ব ভুবই বেশি। কারণে, দেশের মোট উৎপদিত কাঠের ৬০% এ বনভূমির থেকে সংগ্রহ করা হয়।
এছাড়া ভগ্ন উপকূলের প্রভাবে এ দেশে দুটি স্বাভাবিক সামুদ্রিক বন্দর গড়ে উঠেছে, যা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বাংলাদেশের কৃষি, শিল্প ও ব্যবসায়-বাণিজ্যে সহায়তা করেছে।
সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা কৃষি প্রধান এ দেশ বিশ্বে পরিচিত হওয়ার অন্যতম কারণ হলো এর ভূ-প্রকৃতিগত বৈশিষ্টের কারণেই প্রচুর কৃষিপণ্রম অর্থকরী ফসল ও প্রাকৃতিক সম্পদের সমারোহ দেখতে পাওয়া যায়। এর সমভূমি চাষাবাদের জন্য খুবই উপযোগী ও উর্বব । বাংলাদেশের এ সুন্দর ভূ-প্রকৃতি দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখছে।
No comments:
Post a Comment