Tuesday, December 24, 2024

ভূরাজনীতিতে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের চিত্র

বিশ্ব রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের চিত্র নিম্নরুপ:

বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাসে করণীয়:
বর্তমানে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যে অসম বাণিজ্য ঘাটতি বিরাজমান রয়েছে তা দূর করতে বাংলাদেশ ভূরাজনৈতিক অবস্থাকে কাজে লাগাতে পারে । ভারতেকে বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাসে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। বাংলাদেশের সকল পণ্য সামগ্রীর ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত প্রবেশ সুবিধা প্রদান করতে হবে।

সীমান্ত হত্যা সমস্যার সমাধান:
ভারতের নিকট বাংলাদেশের একটা ভৌগোলিক গুরুত্ব রয়েছে এবং বাংলাদেশ ভারতের ইস্ট পলিসির অন্যতম অংশ। তাই বাংলাদেশ ভারতের সাথে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সীমান্ত হত্যা সমস্যা সমাধান করতে পারে।

আকাশ সহযোগিতা বৃদ্ধি:
ভারতের সাথে বাংলাদেশের আকাশ সহযোগিতা বৃদ্ধি করা যেতে পারে। তাছাড়া বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা যেতে পারে। সেই সাথে সীমান্তে পাচার বিরোধী প্রচেষ্টার মনোযোগ দেওয়ার সময় এখনই।

পানি বণ্টন সমস্যা:
সামপ্রতিক সময়ে মণিপুর রাজ্যে ভারত জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বরাক নদীর উপর টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করেছে। পানি বণ্টন সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের দাবি আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী তিস্তা নদীর পানির নায্য অংশ দিয়ে পাশ্ববর্তী দেশের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা ভারতের একান্ত কর্তব্য এবং সময়ের দাবী।

মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি:
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান যে পণ্য উৎপাদন করে তা দেশের চাহিদা মেটাতে প্রায় সক্ষম। ভারতকে বাংলাদেশে মুক্তভাবে পণ্যের প্রবেশাধিকার দিলে এদেশে উৎপাদিত পণ্য অবিক্রিত থাকবে এবং তার ফলে শিল্প কারখানার যে ক্ষতি হবে তার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়বে কারখানার কর্মরত কর্মচারীদের উপর । এক্ষেত্রে ভারতেরও তাদের বাজার বাংলাদেশী পণ্যের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে হবে।


ট্রানজিট ও ট্রানশিপমেন্ট:
যখনই ভারতের সাথে বাংলাদেশের কোন দ্বিপাক্ষিক আলোচনার প্রশ্ন এসেছে তখনই ট্রানজিট ও ট্রানশিপমেন্ট বিষয়টিকে আলোচনার মূল এজেন্ডায় এনে দরকষাকষির চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। ফলে এ বিষয়টিতে বাংলাদেশ ছাড় না দেয়ায় ভারত বাংলাদেশকে বেকায়দায় ফেলার নানা ফন্দি আঁটকে কখনোই ভুল করেনি।

সদুদ্রসীমা বিরোধ:
৭ জুলাই, ২০১৪ নিষ্পত্তি হয় ভারতের সাথে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা বিরোধ । এ বিরোধ নিষ্পত্তির ফলে বাংলাদেশ এক বিপুল অঞ্চলে তার পূর্ণ অধিকার ও সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্টা করতে পেরেছে।

জ্বালানী নিরাপত্তা:
বাংলাদেশ যে পরিমাণ গ্যাস প্রতিবছর প্রয়োজন হয় সেই তুলনায় গ্যাসের এ মজুদ যথেষ্ট নয়। দেশে গ্যাসের চাহিদা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। এই পরিস্থিতিতে ভারত বিভিন্ন বাংলাদেশকে দেশটির কাছে গ্যাস রপ্তানী করতে চাপ দিচ্ছিল। বিভিন্ন কারণে ভারতে রপ্তানির চুক্তি হয়নি। কিন্তু এর মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ আগামীতে জ্বালানী নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতকেও সর্তক থাকতে হবে যেন তার মোরলিপনার কারণে প্বার্শবর্তী ছোট কিন্তু ভৌগোলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ দেশটি ক্ষতির সম্মুখীন না হয়।

অবকাঠামোগত উন্নয়ন:
দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে ভারতের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যেতে পারে । ইতোমধ্যে ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির অবকাঠামো নির্মাণের অংশ হিসেবে দুই দেশের মধ্যে ৩৫ বছর মেয়াদী বিদ্যুৎ সঞ্চালনের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

No comments:

Post a Comment